কবে আসবে সেদিন

20180727_202702

কবে আসবে সেদিন
 প্রেমিকা বসে থাকবে
এক অজানা প্রেমিকের
  বয়ে আনা চিঠি
যেদিন তরুন তরুনীরা
  থাকবেনা বুদ হয়ে
মরণ ফাদ যন্ত্রাংশে
 সেদিন হবে শহরে
ডাকপিয়নের ডাকের ছড়াছড়ি
 খাকি পোশাকে ভরে
যাবে এই শহরতলী
 কবে আসবে সেদিন
যেদিন শোনা যাবে
 তরুন তরুণী ভীরে
কোন এক পুথিপাঠক
 বসে শোনাচ্ছে পুথিপাঠ
যেখানে নেই কোন
 দুশ্চিন্তা মত অস্ত্র
নেই কোন ব্যস্ততা
 তাদের ভিতর থাকবে
অজস্র রুপকথার ঘ্রাণ
 কবে আসবে সেদিন
যে মাঠে নামবে
 তরুণ তরুণীদের দল
আন্দোলন করে মরবে
 নাম্নাজানা অজস্র প্রাণ
যাদের আন্দোলনে হবে
 নতুন জাগরনের গান
আসবে কি সেদিন
 যেদিন মোমের আলোয়
লেখা হবে গল্প
 যে গল্পে থাকবে
জাগ্রত জনতার প্রান
 জানিনা এখনও আমি
আসবে কি ফিরে
 দেখব কি সেদিন
এই তাজা প্রান

রক্ত চাই রক্ত চাই

IMG_8282

রক্ত চাই রক্ত চাই
 অনেক রক্ত লাগবে আমার
যেখান থেকে পারো আনো
 আমি রক্ত দিয়ে লড়বো
আমার হরেকরকম রক্ত চাই
ক্ষুদিরামের রক্ত চাই
  ৫২র আন্দোলনের রক্ত চাই
৬৯ এর রক্ত চাই
 ৭১ এর রক্ত চাই
ক্রাচের কর্নেলের রক্ত চাই
কোথায় আছে এদের রক্ত
  আমি পান করতে চাই
এনে দেও আমায় রক্ত
 এই রক্ত দিয়ে হবে
আমার সংগ্রামের সূএ খানা
কই এলেনা নিয়ে রক্ত
 আর পারছি না আমি
বইতে শরীরে বেঈমানের রক্ত
 যে রক্তে আছে অসততা
যে রক্তে আছে ভীরুতা
 আমি এই রক্ত চাইনা
মরতে যখন হবে আমার
 বীরের বেশে মরতে চাই
মায়ের দেশে জন্মে আমি
 বীরের মত বাচতে চাই

প্যারিসের শেষ চিঠি

20190408_160930

কলিং বেলের শব্দে মিমির হাত থেকে কাপটা পড়ে ভেঙ্গে গেল।

মিমি> ধ্যাত এই সময় আবার কে এলো।

দরজাটা খুলে দেখে পিয়ন দাঁড়ানো।

মিমি> একটু বিরক্তি ভাবে বলল কি?

পিয়ন> নুসরাত জাহান মিমি আছে কি?

মিমি> আমি। বলুন

পিয়ন> আপনার নামে একটা চিঠি এসেছে। এই নিন।

মনে মনে মিমি বলল আমার নামে চিঠি কে পাঠালো

মিমি > কোথার থেকে চিঠি ?

পিয়ন> বিদেশ থেকে

মিমি চিঠিটা পিয়নের কাছ থেকে নিয়ে ঘরে চলে এলো। চিঠিটা ডাইনিং টেবিলের উপর রেখে রান্না ঘরে চলে গেল। সারাদিন কাজ শেষ করে বিকেল বেলা বারান্দায় চেয়ারে বসে চা পান করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। হঠাৎ মনে পড়লো চিঠিটার কথা। চায়ের কাপটা রেখে দৌড় দিয়ে চিঠিটা আনতে গেল।

সাদা খামে মোড়ানো চিঠিটা। চিঠির উপরে ঠিকানা দেখে বুঝলো এটা প্যারিস থেকে আসা। মিমি ভাবলও কে? ও চিঠিটা খুলল,

প্রিয় জানুবানু,

কেমন আছো ? চিঠিটা জানিনা তোমার কাছে পৌঁছাবে কিনা। যদি তুমি চিঠিটা পাও আমি ততক্ষন এই দুনিয়াতে থাকবো না। আমি জানি তুমি আমার উপর অনেক অভিমান করে আছো। কিন্তু আমি তোমাকে সবসময় ভালবেসে গেছি। আমি কি এমন দোষ করেছি যে তুমি আমায় ছেড়ে চলে গেছ। যার কারনে মনে হয় আজ আমার এই অবস্তা। শুনেছি তোমার নাকি অনেক বনেদী ঘরে ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে। অনেক সুখে দিন কাটাচ্ছো। আজ না প্যারিসে অনেক বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল তোমার প্রিয় তুষার পাত হয়েছিল। আমি সেই তুষার পাতের সাথে তোমায় নিয়ে অনেক কথা বলেছি। প্যারিসের তুষার পাতে তোমার প্রিয় ভালবাসার শহরটা সাদা হয়ে গিয়েছিল। আমি অনেক অনেক অনেক মিস করেছি গতকাল তোমায়। আমার তো ঠাণ্ডা লাগানো নিষেধ। ডাক্তার বলেছিল ঠাণ্ডা লাগালে আমার পরিস্থিথি অনেক খারাপ হয়ে যাবে। কিন্তু কি করবো বল আমি তো গতকালের তুষার পাতকে তুমি ভেবে সারারাত জড়িয়ে শুয়ে ছিলাম। সকালে উঠে দেখি সারা বরফের রং লাল হয়ে গিয়েছে। তার কিছুক্ষন পর বৃষ্টি হয়েছিল। সেই বৃষ্টিতে সব লাল রং মুছে গেছে। কারণ তুমি তো লাল রং পছন্দ করো না। তাই তোমার সুর বৃষ্টি সেটাকে ধুয়ে দিয়েছে। জানু তোমাকে আমি খুব মিস করছি। আজ তোমার আইফেল টাওয়ারটায় সন্ধ্যার বাতি দিতে ভুলে গেছে। আজ তুমিও নাই তাই প্যারিসে মনে হয় শোখের তাপ হচ্ছে। আমি তোমার প্রিয় বারান্দায় তোমার দেওয়া ভালবাসার হাওয়া দিয়ে তোমাকে লিখছি আমার জীবনের শেষ চিঠি। আমি গত এক বছর ধরে ক্যান্সারে ভুগছি। কিভাবে বেচে আছি তা বলতে পারবো না। মনে হয় তোমার ভালবাসার কারণে। আমার সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। এখন যাওয়ার সময় হয়ে গেছে আমার । ভালও থেকো।

ইতি তোমার

পাগল।

মিমি কিছুক্ষন থমকে গেল। হাত থেকে চায়ের কাপটা পড়ে গেল। আর তার চোখ থেকে পানি পড়লো। সেই সময় ঝড়ো বাতাসে হাত থেকে চিঠিটা উড়ে গেল  রাস্তায় গিয়ে পড়লো। আর হালকা বৃষ্টিতে সেই চিঠিটা ভিজতে লাগলো। আর মিমি বারান্দায় স্থির ভাবে বসে ছিল আর চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়তে থাকলো।

 

 

খুন

MurderOfServantGirl
একদা আমাদের এক বন্ধু ছিল। নাম ছিল বনি। একেবারে হাবাগবা। তবে ওর মনটা অনেক নরম। মানে ও খুব সরল সহজ মানুষ। একদিন সন্ধে সময় আমরা কয়েকজন মিলে রাস্তায় হাটছিলাম। ওকে নিয়ে আমরা খুব মজা করতাম। সেদিনও আমরা অনেক ক্ষেপিয়েছিলাম ওর বউকে নিয়ে। আমরা যে রাস্তা দিয়ে হাটছিলাম সেই রাস্তায় ফুটপাতে অনেক মেয়ে ছেলেরা বসে ছিল। সবাই জোড়াই জোড়াই বসে ছিল। আমরা ওকে বলছিলাম দেখিস তোর বউ থাকতে পারে। বনি দেখি চুপ হয়ে ছিল। কিছু দূর যেতেই পিছন ফিরে দেখি বনি নাই। তাকে কল করা হল কিন্তু কল ধরল না। ভাবলাম সে মনে হয় রাগ করে চলে গেছে। পরেরদিন সকালে চা টা নিয়ে বারান্দায় বসে পেপারটা খুললাম। খুলে দেখি একটা খুনের সংবাদ। পরকীয়া জের ধরে স্ত্রী কে খুন। ছবিটা ও চেনা চেনা লাগলো। দেখি বনির ছবি। গতকাল রাতে সে তার স্ত্রী  কে খুন করেছে।
পরে জানা গেল ওই রোডে তার স্ত্রী একজনের সাথে ছিল।

লাশের ঘর

autopsy-at-the-hotel-dieu-henri-gervex

২০০৫ সালের কথা, আমি তখন একটা পুরানো বইয়ের দোকানে কাজ করতাম। আমার আবার বই পড়া খুব শখ ছিল। যখন সময় পেতাম তখন দুই একটা বই বাসায় নিয়ে পড়া হতো। আমাদের দোকানে বই বেশী আসতো বছরের শেষের দিকে। সেই সময় খুব ব্যাস্ত থাকা হতো। ডিসেম্বরের শেষের দিকে, একদিন আমি বই গুলোকে শেল্ফে সাজাচ্ছিলাম। হঠাৎ আমার হাতের থেকে একটা বই নিচে পড়ে গেলো। আমি সেটা তুলতে গিয়ে দেখি এটা বই না এটা একটা ডাইরি। পেজগুলো খুলে দেখি অনেক কিছু লেখা। মনের ভিতর একটা আনন্দ লাগলো। কারণ ডাইরিতে অনেক অসাধারণ গল্প থাকে। ভাবলাম এটাকে আজকে নিয়ে গিয়ে পড়বো। হাজার হোক ডাইরি। ডাইরি পড়তে আসলে মজা আছে। রাতে বাসায় ফেরার পথে ডাইরিটা নিয়ে ফিরলাম। বাসা বলতে একটা রুম নিয়ে থাকি আমি। বাসাটা আমার চিলেকোঠা ছিল। চারতলার উপর বাসাটা। একাই থাকি। রাতে খাওয়া দাওয়া সেরে বিছানায় হেলান দিলাম। জানালার পাশে বিছানাটা। বাইরে দখিণার বাতাস এই জানালা দিয়ে আসে। কি যে মজা লাগে তা বলার বাইরে। তা বছানায় হেলান দিয়ে একটা সিগারেট টানতে লাগলাম। আর মনের ভিতরে এক ধরনের ফুর্তি কাজ করছে। কারণ কাল ছুটি এরপর ডাইরি পড়বো আজ রাতে। সিগারেট শেষ করে টেবিল ল্যাম্পটা জ্বালিয়ে ডাইরিটা খুললাম। কয়েক পেজ পড়তে থাকলাম কিন্তু কোন মজাই পাচ্ছিনা। মেজাজটা আরও খারাপ হয়ে গেলো। কোন ভালো কিছুই পেলাম না। সেই এক ধরনের কথা বার বার এলো। যেমন ছিল, আমি এই খাবার খেলাম, আমি আজকে এই করলাম ইত্যাদি। ঘড়ীর দিক তাকিয়ে দেখি প্রায় ১ টা বাজতে গেলো। এই দিকে ঘুম আসে না। কি করি ? বেশ কয়েকটা পাতা আবার ফাকা ছিল। জানিনা কেন। হঠাৎ মাঝের পেজ সরাতে আমি একটু অবাক হলাম। সেখানে লেখা ছিল,

২৪/১২/২০০৪

রাত যতই গভীর হচ্ছে আমার মনের ভিতর কেন যেনও নিজেকে অনেক দোষী মনে হচ্ছে। গত দুইদিন আগের ঘটনাটা আমাকে কিছুইতে ভুলতে দিচ্ছে না। শুধু নিজের কাছে বার বার একটা প্রশ্ন কেন আমি এই কাজটা করলাম। কি যে অশান্তি লাগছে বোঝানো যাবে না।

গতদুদিন আগে একটা মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। আমি তো লাশের ঘরে কাজ করি। আমি সেদিন দুপুরে কাজে ছিলাম। সেদিনে প্রায় ১৫ কি ১৬ টা মরাদেহ এসেছিল। সবগুলোর পোস্টমর্টেম শেষ করে লাশগুলোকে লাশঘরে রেখে বের হতে না হতে একটা লাশ এসে হাজির। দেখলাম একটা ছেলের লাশ। বয়স ২৮/২৯ হবে। এদিকে সবাই দুপুরের খাবার খেতে চলে গেছে। শুধু আমি আর আনিস ভাই ছিলাম। তা লাশের পোস্টমর্টেম করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ মোবাইলের রিং টোনের শব্দ হচ্ছে। আমি দেখলাম আমার না। আনিস ভাই বলল তারও না। তাহলে কার ? দেখি লাশের প্যান্টের পকেট থেকে বেজে উঠলো। আমি মোবাইলটাকে বের করে দেখি সেই মৃত ব্যাক্তির স্ত্রী রিং দিচ্ছে। কি করি নিজেই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তাই মোবাইলটা বন্ধ করে দিলাম। এইদিকে পোস্টমর্টেম এর কাজটা সেরে আমি বাইরে বসে ছিলাম। তখন প্রায় ৫ টা বেজে গেছে। আমি কি মনে করে মোবাইলটা আবার চালু করলাম। চালু করার সাথে সাথে আবার বেজে উঠল। আমি কি করবো তা বুঝে উঠতে পারছিলাম। আবার কেটে দিলাম। কিন্তু কেটে দেওয়ার পর পর আবার বেজে উঠলো। আমি না পেরে ধরলাম,

আমি> হ্যালো

আগুন্তক> কোথায় তুমি ?{কান্নার স্বরে)

আমি মেয়েটার গলা শুনে কি বলবো কিছুই বুঝছিলাম না। অনেক ভেবে তার স্বামী সেজে কথা শুরু করলাম,

আমি> আমি তো অফিসে। কেন ?

মেয়েটা> খুব চিন্তা হচ্ছে আমার। পাশের বাড়ি ভাবী এসে বলল তোমাদের ঐখানে নাকি আগুন লেগেছে ?

আমি > হ্যাঁ কিন্তু আমি ঠিক আছি। চিন্তা করো না। আমি চলে আসবো।

মেয়েটা> তোমার গলার আওয়াজটা এমন কর্কশ ভাবে শোনা যাচ্ছে কেন ?

আমি> ঐ একটু গলায় সমস্যা হয়েছে ।

মেয়েটা > তোমার কি মনে আছে কাল সন্ধ্যায় চোখের ডাক্তারের ঐখানে নিয়ে যাবে।

আমি> চোখের ডাক্তারের ঐখানে কেন ?

মেয়েটা> আমি জানতাম তুমি ভুলে যাবে। কেন জানোনা, চোখের ডোনার পাওয়া গেছে। ডাক্তার বলেছে এবারে অপোরেশনের পর আমার চোখ ঠিক হয়ে যাবে।

আমি > ও ভুলে গেছিলাম। আগে বাসায় আসি এরপর কথা হবে। আর সাবধানে থেকো।

এই বলে ফোনটা কেটে দিলাম। ভাবছিলাম কি করবো। কিছুই মাথায় আসছে না। আমি কি একবার যাবো। গিয়ে তার স্বামীর মৃত্যুর সংবাদটা দিয়ে আসি। যাওয়াটা কি ঠিক হবে ? বাসার ঠিকানাটা কই পাই। পরে মনে পড়লো ঐ লোকের মানিব্যাগে পাওয়া যাবে। আমি লাশ ঘরে ঢুকে আশেপাশে তাকালাম কেউ আছে কিনা। তারপর আমি ঠিক মত খোজ করলাম তার মানিব্যাগ। অবশেষে পেয়ে গেলাম। কয়েকবার ভাবছিলাম যাব কি যাব না। হাতে ঘড়ীর দিক তাকিয়ে দেখি ৭ টা বেজে গেছে। লাশ ঘরের কাজ শেষ করে বের হলাম। একটা সিগারেট ধরিয়ে শুধু ভাবছিলাম যে যাবো কিনা। পরে চিন্তা করে দেখলাম যাই একবার। যা হবার হবে ।

একটা স্রু গলির ভিতর ৪ তালার বাড়ির ৩ তলায় থাকে। আমি দরজার চাবি ঐ মানিব্যাগে পেয়েছিলাম বলে কষ্ট হয়নি। দরজা খুলতেই দেখি এক অপরূপ পরী যেন আমার সামনে দাড়িয়ে। একেবারে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। আমি প্রথমে একটু থতমত খেয়ে গেছিলাম। কিন্তু পর মুহূর্তে মনে পড়লো সে তো অন্ধ। সে দেখি আমার দিকে এগিয়ে আসছে।

মেয়ে> এই সময় হল তোমার। আমি ভয় পাচ্ছিলাম। তুমি জানো আমার এই অবস্থা তারপরও বার বার কেন এমন করো।

আমি চুপ করে দাড়িয়ে কথা শুনছি।

মেয়েটা আমার শরীরে হাত দিতেই বলে উঠলো

মেয়েটা> তোমার শরীরে এত ঘাম কেন ? আর হাতটা এই রকম শক্ত কেন ?

আমি> আজকে একটু বেশী কাজ হয়েছে তারপর বাসে এতো জ্যাম কি বলবো।

মেয়েটা> ও তাই। যাও হাত মুখ ধুয়ে নেও।

আমি আর কথা না বলে হাতমুখ ধুয়ে নিলাম। কি করবো বুঝছি না। বলে দিবো যে আমি সে না। কি করি ?

বাথরুম থেকে বের হয়ে আমি খাবার টেবিলে গিয়ে বসে খাচ্ছিলাম। মেয়েটা এসে বলল, তোমার আজ কি হয়েছে বল তো ? প্রতিদিন আমাকে খাওয়া দাওয়া করিয়ে তারপর তুমি খেতে আজ কিছুই করলে না।

আমি বললাম, অনেক ক্ষুদা লেগে গেছিলো। তাই বসে গেছি।

এইকথা শুনে মেয়েটা চলে গেলো ঘরের দিকে। কিছুই বললনা।

আমি সব কিছু সেরে ওর জন্য খাবার নিয়ে ঘরে গেলাম। ভাবলাম কিছু খাওয়াইদি বেচারি কিছুই খাইনি মনে হয় এখনই।

ঘরে ঢুকে দেখি জানালার পাশে দাড়িয়ে কাঁদছে। আমি তো হতভাক। কাছে যেতেই আমি বললাম কেন কাদছো ?

মেয়েটা> সত্যি করে বলও তো তুমি কে ? আর কেন তুমি এইখানে এসেছো ?

এই কথা শুনার মাত্র আমার হাতের থেকে খাবারের থালাটা পড়ে গেলো মাটিতে।

আমি> তুমি কি করে বুঝলে ?

মেয়েটা> তোমার কাজ কর্ম দেখে। আমার স্বামী এমন করে না। যেগুলো তুমি করছ। আর আমার স্বামীর ঘামের গন্ধ আমি তো চিনি। আগে বলও তুমি কি উদ্দেশে এসেছ ?

এইকথা বলে মেয়েটা আমার থেকে আরও দূরে সড়ে গেলো।

আমি সাহস পাচ্ছিলাম না। উলটা আরও ভয় পাচ্ছিলাম যে সে আবার চেচিয়ে না উঠে। আমি তাকে বললাম, একটু শান্ত হন। আমি সব খুলে বলছি।

আমি আর কিছুই গোপন করলাম না। সব কিছু তাকে বলে দিলাম।

মেয়েটা এতো কান্না করলো যে তা দেখে আমার চোখ দিয়ে পানি বেয়ে পড়লো। কি যে অসহায় লাগছিলো ওকে। ঘড়ীর দিক তাকিয়ে দেখি রাত ৪ টা বেজে গেছে। আমি দেখলাম মেয়েটা জানালার পাশে বসে রইল। কোন কথা বলিনি। আমি ঘর থেকে বেরিয়ে আসলাম। এরপরও মেয়েটা কোন কথা বলিনি।

পরের দিন সকাল বেলা আমি আমার কাজের ঐখানে বসে কাজ করছিলাম। আনিস ভাই বলল, একটা আত্মহত্যার লাশ এসেছে। এখন পোস্টমর্টেম করা লাগবে। আমি বললাম আসতেছি আপনি যান।

আমি লাশ কাটা ঘরে ঢুকে আনিস ভাইকে বললাম যন্ত্রটা নিয়ে আসো। এইবলে লাশের মুখের উপর দিয়ে কাফনের কাপড়টা তুলা মাত্র আমি এক চীৎকার দিয়ে ঐখানে অজ্ঞান হয়ে পড়লাম। জ্ঞান ফেরার পর দেখি আমি আমি বিছানায় শুয়া। আনিস ভাই বলল কি হয়েছে রে, আমি কিছুই বললাম না । শুধু জিজ্ঞাসা করলাম লাশটা কোথায় ? আনিস ভাই বলল, লাশটার দাফন হয়ে গেছে দুপুরে। ঘড়ীর দিক তাকিয়ে দেখি প্রায় ১০ টা বেজে গেছে। আর আমি আমার ঘরে। আর সে এখন কবরে। আমি সত্যি নিজেকে মাফ করতে পারছি না। কেন গতকাল রাতে আমি ঐ মেয়েটা কেন বলতে গেলাম। না বললে আজ হইত সে বেচে থাকত।

ঘড়ীর দিক তাকিয়ে দেখি ৩ টা বেজে গেছে। গল্পটা পড়ে ডাইরিটা বন্ধ করে ঘুমাতে যাবো। কি মনে করে আমি ক্যালেন্ডারের দিক তাকিয়ে দেখি আজ ২৪/১২/২০০৫।